সম্ভবত আমার মতো আলসিয়া যারা আছেন তাদের সবারই লাইফে ফজরের সালাত একটা বড় চ্যালেঞ্জ। 😦 প্রতিদিন এত করে চাই, তবুও ফজরের সালাত মিস হয়। এত আলসিয়া মানুষ আমি আমার লাইফে আর দেখিনাই 😦 তাড়াতাড়ি শুতে যাই। ভয়াবহ এলার্ম সেট করি। কোন লাভই হয়না। ইভেন, ঘুমের মাঝেই এলার্ম কিভাবে বন্ধ করে দিই সেটাও এক রহস্য। এটা নিয়ে প্রতিদিন আমার মন খারাপ হয়ে থাকতো। সারাদিন নিজেকে ফালতু মনে হতো। দিন যদি শুরুই হয় একটা চরম ব্যর্থতা দিয়ে, শাইত্বানের সাথে যুদ্ধে হেরে গিয়ে কেমন লাগে? আর বেশি খারাপ লাগে কারণ, আমার সাথে শাইত্বান প্রায় বিনা যুদ্ধেই জিতে যায়, ব্যাটার বোধহয় ফাইটই করতে হয়না আমার সাথে >_< । জাস্ট আমাকে কানে কানে বলে দেয়,
.
“এইতো আর পাঁচ মিনিট ঘুমিয়ে নাও। তারপরে নামাজ পড়বা আর কি! গতকাল তোমার উপরে যা ধকল গেছে!! ঘুমেরও দরকার আছে। আর পাঁচ মিনিটই তো মাত্র।”
.
আমিও কনভিন্স হয়ে পাঁচ মিনিটের জন্যে শুয়ে পড়ি। যা হবার তাই হয় 😦 আমার প্রতি আমার রাব্বের ডাক অবহেলায় পড়ে থাকে। বিষন্ন লাগে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে কি, গত দুই সপ্তাহ হতে একদিনও ফজরের সালাত মিস হয়নি। নিজে উঠে, বাসার সবাইকে নিয়ে সালাত আদায় করতে পারছি আলহামদুলিল্লাহ। 😀 কিভাবে? মাত্র চারটা কাজ করলেই হয়। দাঁড়ান, খুলে বলি আপনাকে। 😀
.
প্রথমত, আপনি যত কাজের কাজীই হোন না কেন, দুনিয়ার যত ইম্পর্ট্যান্ট কাজই থাকুক না কেন সব রাত ১০টার আগেই শেষ করবেন। দিনকে ওভাবেই সাজিয়ে নিন, সব কাজ শেষ করুন। কেমনে করবেন? 😀 আমি কি জানি? ওইটাতো আপনাকেই বের করতে হবে। করতেই হবে। তারপর ভালোভাবে, সুন্দর করে ওজু করে, রাত ১০টা ০১ মিনিটে আপনার নিজেকে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় আবিস্কার করতে হবে 😀
.
দ্বিতীয়ত, মোবাইলে এমন সাউন্ডের এলার্ম সেট করুন যাতে ঘুম অবশ্যই ভাঙ্গে। হাতের নাগালে মোবাইল রাখেন কেন, হ্যাঁ? খুব চালাক, না? দূরে মোবাইল রাখবেন, যেন উঠে গিয়ে বন্ধ করতে হয়। আমার মতো অলস অবোধদের জন্যে এলার্মের আওয়াজ সুমধুর না হয়ে বিরক্তিকর হওয়াটা সুপার ইম্পর্ট্যান্ট 😀
.
তৃতীয়ত, মোবাইল দূরে রেখে দেয়ার পরে অবশ্যই পরিপূর্ণ করে দুই গ্লাস পানি নিবেন। বসবেন। কারণ, পানি তো বসেই খেতে হয়। তারপর গ্লাস টেবিলে রেখেই শুয়ে যাবেন। চোখ বন্ধ করার আগে আল্লাহর সাথে একটু কথা বলে নিন, বলুন,
.
“ও আল্লাহ, তুমি ছাড়া আমাকে সাহায্য করার কেউই নাই, কেউ না। প্লিইইজ আমাকে হেল্প কর, যাতে ফজরের সালাত মাস্ট মাস্ট মাস্ট পড়তে পারি। প্লিইইইইইজ আল্লাহ 😦 হেল্প মি। তুমি হেল্প করলে আমাকে কেউ আটকাইতে পারবেনা।”
.
তারপর, “আল্লাহুম্মা বি-ইসমিকা, আমুতু ওয়াহইয়া” বলেই চোখ বন্ধ করুন। আর কোন কাজ নয় 😀
.
এলার্মের আওয়াজে ঘুম ভাঙ্গবেই। এলার্ম অফ করতে উঠে টের পাবেন যে আপনার ব্লাডারেও এলার্ম বাজছে। হেহেহেঃ ওই এলার্ম থামাতে আপনাকে টয়লেটে যেতেই হবে। ব্যাস! আর কি লাগে? 😀
.
চতুর্থত, আপনি যদি মহা আলসিয়া হোন? যদি “বিছানা ভিজাবো, তবু উঠবোনা যে উঠবোনা” টাইপের হোন সেইজন্যে আপনার জন্যে ফাইনাল স্টেপ 😀 সিদ্ধান্ত নিন, কালকেও যদি ফজরের সালাত মিস হয় তাইলে আমার শাস্তি আছে। কি শাস্তি? শাস্তিটা হলো,
.
“যদি ঠিক ওয়াক্তে ফজরের নামাজ না পড়া হয়, কাজা হয়ে যায়, তাহলে আমাকে এক হাজার টাকা দান করে দিতে হবে ঐদিনই।”
আপনি অনেক ধনী হলে টাকার এমাউন্ট বাড়িয়ে নিন, আর গরিব হলে কমিয়ে নিন।
তবে মনে রাখবেন,
রুলস হলো,
.
টাকার এমাউন্ট টা এমন হওয়া যাবে না যেটা দিতে আপনার কোন ফীলিংসই হবেনা 😀 এমন হতে হবে, যেন সেটা দিতে কলিজায় আঘাত লেগে আপনি ব্যাকা হয়ে যান 😀 সেটা দেয়া থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্যে আপনাকে অবশ্যই উঠতে হবে। যদি না উঠেন, তাহলে ঐদিন সকালেই টাকাটা দান করে দিবেন। হ্যাঁ, ঐদিনই 😀
.
ফরজ ইবাদাত মুসলিম উম্মাহর প্রত্যেকের জন্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। আপনি নফল ইবাদাত, দান, সাদাকা লুকিয়ে করবেন, কিন্তু ফরজ ইবাদাত গুলোর বেশিরভাগই একসাথে করতে হয়। এতে ভ্রাতৃত্ববোধ মজবুত হয় একজন আরেকজনকে হেল্প করার মাধ্যমে 😀
.
কাজেই, আপনার নিজের ভাই-বোন, সম্ভব হলে আব্বুম্মু আর ফ্রেন্ডসদেরও যদি পারেন ইনভলভ করুন এই আইডিয়াতে। নিজে উঠলে ডেকে দিন। তাঁরা উঠলে যেন আপনাকে অবশ্যই তুলে দেয় সেটার জন্যে অনুরোধ করুন 🙂
আপনি ভাবছেন রাগ করবে? ধুরো না! 😀 উল্টো মজা পেয়ে, আপনার কনসার্ন দেখে খুশি হয়ে অংশ নিবে দেখবেন। 😀 ভালো কাজে সবাই আনন্দের সাথেই অংশ নেয়।
.
“Fajr Salaat Challenge” দিয়ে আপনার বন্ধুকে চ্যালেঞ্জ করুন না। 😀
জান্নাতে একসাথে যেতে হবে না? 😀
[শেয়ার করতে জিজ্ঞেস করতে হবে না। লজ্জা পেতে হবে না, দ্বিধা করতে হবে না। শেয়ার অপশানটা খোলাই থাকে শেয়ার করার জন্যে, ভালো কথা আর আইডিয়া ছড়িয়ে দেয়ার জন্যে। আরেকজনকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্যে।
ভালো কথা সুন্দর ফলবান গাছের মতো। একটা ভালো কথা বললে, ভালো কাজ করলে সেটা যদি কেউ করে তাতেও তো আপনার লাভ। আর সে না করলেও তো ক্ষতি নাই। আপনার ভালো কথা বলা, ভালো কাজের উপদেশ দেয়াটাইতো একটা অসাধারণ কাজ, যেটা আপনাকে আল্লাহর আরো কাছে নিয়ে যায়, প্রিয় করে তোলে। হ্যাঁ, শাইত্বান তো নিষেধ করবেই কানে কানে। সেটাই তো তার কাজ। আমরা সেটা পাত্তা দিবো কেন?]
(http://ibanaway.com/1107/five-feasible-formulae-for-fixing-fajr-flawlessly/ এই লেখা হতে অনুপ্রাণিত)
—————-
বিকেল ৩টা ৪৭মিনিট
যুলহিজ্জার ২০ তারিখ,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হিজরাতের ১৪৩৫ বছর পর।
maashaAllah! may Allah subhanawataala fulfill all your righteous wishes !
LikeLike
maashaAllah ! May Allah fulfill all of your righteous wishes !
LikeLike
MashAllah !!! Nice Idea !!
LikeLike
Ma sha Allah. Brother u have hit the pin point . Hope many will continue their fajr salah properly. Thank u for a splendid writeup.
LikeLike
Ajk sharadin joto lekha porsi shobche best chilo eta…apnar jonno mon theke onek onek dua korlam…Allah apnak duniya akhirat 2ta te e successful banai dek.ameen
LikeLike
Alhamdulillah apu. Jazakillahu khairan for your inspiration.
LikeLike
Amin…………
LikeLike